উবায়দুল্লাহ রুমি, ঈশ্বরগঞ্জ: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ভুয়া দন্ত চিকিৎসক মো. জয়ের ভুল চিকিৎসায় মারুফ হাসান শামীম নামে এক রোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ডাক্তার না হয়েও উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের রায় বাজার চিড়ার মেইলের সামনে চেম্বার দিয়ে বসেছেন জয়। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের অসহায় ও সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে চিকিৎসার নামে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে ।
বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা জানান, দাঁতের চিকিৎসা লাভজনক দেখে কোনো একাডেমিক শিক্ষা ও বিডিএস ডিগ্রি ছাড়াই দন্ত চিকিৎসক বনে যান জয়। গড়ে তোলেন বিসমিল্লাহ ডেন্টাল কেয়ার।
ভুক্তভোগী মারুফ হাসান শামীমের পিতা মোঃ আঃ হাই ছেলের ভুল চিকিৎসা জনিত কারণে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়ার বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত ভাবে অবগত করেছেন।
মোঃ আঃ হাই বলেন, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে আমার ছেলে মারুফ হাসান শামীমের দাঁতে ব্যাথা দেখা দেয়। এক প্রতিবেশীর সহযোগীতায় আঠারবাড়ি চিড়ার মেইলের সামনে ডাক্তার জয়ের বিসমিল্লাহ ডেন্টাল কেয়ার নামক চেম্বারে যাই। সেখানে যাওয়ার পর সে আমার ছেলে মারুফ হাসান শামীমের ব্যাথাযুক্ত দাঁত পরীক্ষা করে একটি দাঁতে ছিদ্র দেখা দিয়েছে বলে জানায়। চিকিৎসক জয় ১৬০০০/- টাকার বিনিমেয়ে আমার ছেলের ছিদ্রযুক্ত ঐ কাঁচা দাঁতটি উঠিয়ে ফেলে এবং আরেকটি দাঁত লাগিয়ে ক্যাপ পড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালে আবারও দাঁতে সমস্যা দেখা দিলে আবারও তাঁর কাছে যাই। তখন সে আবারও বেশ কিছুদিন চিকিৎসা করে। পরবর্তীতে আরও তিনটি দাঁত কেটে ক্যাপ পড়িয়ে দেয়। ২০২৪ সালে এসে আমার ছেলের পুরো দাঁতে তীব্র সমস্যা দেখা দেয়। দাঁতের মাড়ি সহ ফুলে মুখের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। এ অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানকার দন্ত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানান যে, পূর্বের ভুল চিকিৎসায় দাঁতে খুব মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে দাঁত হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে বিসমিল্লাহ ডেন্টাল কেয়ারের স্বত্বাধিকারী চিকিসক মো. জয় বলেন, কয়েক বছর আগে ওই রোগীর চিকিৎসা করেছিলাম। পরবর্তীতে রোগীকে আর আমার কাছে নিয়ে আসেনি। এখন আমার ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তোলে এর ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন। আমি বলছি রোগী নিয়ে আসলে চিকিৎসা করে দেবো। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার বিডিএস ডিগ্রি নেই তবে দন্তের উপর জিডিটি কোর্সটি করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাদিয়া তাসনিম মুনমুন বলেন, অভিযোগটি আমি এখনো পাইনি। অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা সাত্তার বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।
ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগীরা আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।